Wednesday, July 1, 2020

Bob Marley এবং তার মতন এমন কিছু মানুষ যারা নিজেদের মরনের সময় নিজেরাই বলেছিলেন

জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথায় হবে।


মানুষ যেমন জন্মায় তেমন তাকে মরতে হয়  গোটা পৃথিবীতে প্রায় গড়ে ১৫০০০ প্রাণ জন্ম নিচ্ছে প্রত্যেক ঘন্টায় এবং ৬৩০০ মানুষ তাদের প্রাণ  হারাচ্ছে|

কারোর পক্ষেই আগে থেকে বোঝা প্রায় অসম্ভব  কখন বা কবে  মৃত্যুর মুখোমুখি হতে চলেছে কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ ছিলেন যারা নিজের মৃত্যুর  তারিখ তারা সঠিক বলে দিতে পেয়েছিলেন|

Bob Marley

১.Bob Marley

একজন বিখ্যাত সিঙ্গার হিসেবে বব এর নাম হয়তো আপনি শুনেছেন বা  নাও শুনতে পারেন  কারণ তিনি একজন বিদেশি সিঙ্গার ছিলেন একজন গায়ক এর পাশাপাশি রাইটার, মিউজিসিয়ান আজ প্রায় সমস্ত  প্রেমী মানুষের কাছে তিনি একজন ইনস্পিরেশন| ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৫ সালে জামাইকান এর  নাইন মিল শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৬৬ সালে তিনি ও সঙ্গীত মিউজিকের সঙ্গে যুক্ত  হয়েছিলেন। Wailers  নামে একটি দলের সঙ্গে গান লেখা এবং নতুন ধরনের মিউজিক কম্পোজ করা শুরু করেন যা সারা বিশ্বের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তার থেকে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল তার ভবিষ্যৎ বাণী তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের থেকে জানা যায় যে তিনি একজন প্রফেট অর্থাৎ দৈববাণী  ঘোষণাকারী ছিলেন  তারা অনেক ভবিষ্যৎবাণী মিলে যায় এমনকি বন্ধুদেরকে তাদের হাতের রেখা দেখে তাদের ভবিষ্যৎ বলে দিয়েছিল এবং পরবর্তীকালে হয়েছিল। তার বন্ধুরা একদিন মজার খাতিরে তাকে জিজ্ঞেস করে ফেলে তার নিজের মৃত্যু তারিখ সে বলেছিল তার মৃত্যু ৩৬ বছর বয়সে হবে সবাই দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল যে কেন ৩৬ বছর কেই বেছে  নিল  তখন  বব মারলে উত্তর দেন যে প্রভু যীশু ৩৬ বছর বেঁচে ছিলেন। তার এই কথা কে কেউ মেনে নেয়নি এই ঘটনার কিছু বছর পর ১৯৮১ সালে মেলানোমা অর্থাৎ চামড়ার ক্যান্সারের রোগী তিনি মারা যান প্রথমে তার পায়ের আঙ্গুলে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল যেটা  তার মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এবং সেই সময় তার বয়স ছিল মাত্র 36 বছর|

এর পরে যার ব্যাপারে বলতে চলেছি শুনলে অবাক হবেন আরো কারণ বিষয়টি Titanic নিয়ে।

William Thomas Stead

২.William Thomas Stead(Titanic)

1849 সালের 5 ই জুলাইউইলিয়াম থমাস জন্ম করেছিলেন| England এর Northumberland তিনি একটি ইংলিশ নিউজ পেপার এর সম্পাদক ও তদন্তমূলক সাংবাদিকতার অগ্রদূত হিসেবে ভিক্টোরিয়ান যুগের একজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ছিলেন, জনগণের মতামত এবং সরকারের নীতি কে প্রভাবিত করার জন্য নিউজকে কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের নীতি প্রবর্তন করেছিলেন তিনি উইলিয়ামের দাবি ছিল যে আত্মা বা ভূতের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তিনি| তাই তিনি জানেন যে তার জলে ডুবে মৃত্যু ঘটবে যদিও তার এই কথা একটি কন্ত্রভার্শিয়াল টপিক ছিল তবুও তিনি ২২ শে মার্চ ১৮৮৬ সালে  একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেছিলেন। যাতে লেখা হয়েছিল নতুন তৈরি জাহাজ ডুবে যাবে আটলান্টিক মহাসাগরে। মানুষের তুলনায় লাইভ বোর্ড কম থাকায় মৃত্যু হবে অনেক মানুষেরই জাহাজটি কিভাবে ডুবে যেতে পারে সেই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি|এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কিছু বছর পরে ১৯১২ সালে ১২ ই এপ্রিল এ  ফ্রম দা ওয়ার্ল্ড ফ্রম দা নিউ নামক আর্টিকেলে জাহাজের সম্বন্ধে লেখা হয়েছিল তাতে পরিষ্কার বলা হয়েছে বিখ্যাত নতুন একটি জাহাজ আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝামাঝি হিমশৈল এর  সাথে সংঘর্ষ ঘটাবে এবং ডুবে যাবে। আরো আশ্চর্যজনক বিষয় হল ক্যাপ্টেন এডোয়ার্ডস্মিথ নামে সেই গল্পে একজন উদ্ধারকারী হিসেবে লিখে  ছিলেন। এই গল্প প্রকাশের মাত্র দু'বছর পরে ১৪ ই এপ্রিল টাইটানিক জাহাজের সাথে দুর্ঘটনাটি সত্যি ঘটে ছিল এবং এডওয়ার্ড স্মিথ নামের একজন ক্যাপ্টেন বহু মানুষকে বাঁচিয়ে ছিলেন ও ঠিক ওই সময়ে William Thomas Stead মৃত্যু হয়েছিল কারণ উনি নিজেও টাইটানিক জাহাজে উপস্থিত ছিলেন জাহাজের ফার্স্ট ক্লাসের যাত্রী হওয়া সত্বেও তার ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী প্রাণ হারিয়েছিলেন তিনি|
Abraham De Moivre

৩.Abraham De Moivre


১৬৬৭ সালে ২৬ মে ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি গণিতের সূত্রের জন্য সবার কাছে সুপরিচিত ছিলেন এই  ফ্রান্স গণিতবিদ। তিনি সর্বপ্রথমজটিল সংখ্যা এবং ত্রিকোণমিতির সূত্র তৈরি করেছিলেন। বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন ছিলেন তার খুব ভালো বন্ধু। ফ্রান্সে খ্রিস্টানদের ওপর ধর্মীয় নিপীড়ন ও অত্যাচার চালানো হয়েছিল তার সত্বেও তিনি খ্রিস্টধর্ম ছাড়েননি। তার লেখা বিখ্যাত বই হল প্রবাবিলিটি থিওরিও দ্যা ডক্টর আইন অফ চান্স এস। আব্রাহাম ছোট থেকেই খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। যেহেতু তার বাবা একজন সার্জেন্ট ছিল। তাই তখনকার দিনে লেখাপড়ার গুরুত্ব কতটা ভালো করে বুঝতেন। তিনিমাত্র ১১ বছর বয়সে তাকে উচ্চশিক্ষার জন্য সুইডেনের প্রটেস্টান্ট একাডেমিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।দীর্ঘ চার বছর সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন তিনি কিছুদিন পর ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে  স্থাপন করেছিলেন। একজন খুব ভালো গণিতবিদ হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে  লন্ডনের একজন বিখ্যাত গণিত শিক্ষক হয়ে উঠেছিলেন আব্রাহিম। তিনি নিজেও বিভিন্ন রকম বই পড়তে খুব ভালোবাসতেন।১৯৬২ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটন এবং ইব্রাহিমের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।১৭৫৪ সালে ৮৪ বছর বয়স থেকে তার শরীরে অদ্ভুত কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকদিন আগের দিনের তুলনায় নিজেকে বেশি অক্ষম ও দুর্বল অনুভব করছিলেন। আব্রাহাম রোজ অতিরিক্ত 15 মিনিট করে ঘুমাতেন অর্থাৎ আজ ১৫ মিনিট বেশি এবং কাল ১৫+১৫=৩0 মিনিট বেশি এইভাবে ক্রমাগত সময় বেড়েই চলেছিল। আব্রাহিম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ১৫ মিনিট করে সময় বাড়তে বাড়তে যেদিন ২৪ ঘণ্টায় গিয়ে পৌঁছাবে সেদিন হবে তার জীবনের শেষ দিন। অংক কষে গণনার মাধ্যমে তিনি বলেছিলেন যে এই বছরের ২৭ নভেম্বর মারা যাবেন তিনি। এবং আশ্চর্যজনকভাবে ১৭৫৪ সালের ঘুমের মধ্যে মারা যান তিনি। তাহলে কি সত্যিই অংকের মাধ্যমে মৃত্যুর তারিখ গণনা করা যায় আপনাদের কি মনে হয় কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। 
Arnold Schoenberg

৪.Arnold Schoenberg

আমাদের পৃথিবীতে অনেক মানুষই বিভিন্ন রকম ফোবিয়া বা আতঙ্কজনক কোন রোগে ভোগেন সেটি হতে পারে উচ্চতা থেকে ভয় পাখি থেকে ভয় মাকড়সা থেকে ভয় সাপ থেকে ভয় এমনকি কোনো নির্দিষ্ট কালারও দেখতে ভয় পান বহু মানুষ কিন্তু আপনি কি শুনেছেন কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা কোন মানুষের ভয়ের কারণ হতে পারে।

Arnold Schoenberg ১৮৭৪ সালে ১৩ ই সেপ্টেম্বর ভিয়েনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন |তিনি ছিলেন এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তার বাবা একজন জুতা  দোকানের বিক্রেতা এবং তার মা ছিলেন একজন পিয়ানো টিচার তিনি তার মায়ের কাছ থেকেই সংগীতজগতে যাওয়ার প্রেরণা পেয়েছিল| পরবর্তীকালে সে অস্ট্রিয়ান, আমেরিকান কম্পোজার মিউজিক থেরাপিস্ট মিউজিক টিচার, একজন লেখক ও পেন্টার হিসাবে সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এত প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও সময়ের একটা আতঙ্কে ভুগছেন তিনি Arnold  যেহেতু ১৩ তারিখে জন্মেছিল তিনি মনে করতেন ১৩ তারিখেই তার মৃত্যু হবে অথবা তার সঙ্গে যুক্ত কোন দিনে তিনি প্রাণ হারাবেন প্রত্যেক মাসের ১৩ তারিখে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটবে। তার ফোবিয়ার নাম হল ফিক্স আইডিকা। তিনি পরিবারের লোকজন এবং বন্ধুদের কাছে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ১৩ কে ১৩ দিয়ে মাল্টিপ্লাই করলে যেই সংখ্যাটি আছে সেই বছরে তিনি মারা যাবেন। তার প্রত্যেক বছর অন্তর ১৩ তারিখে সারাদিন তিনি নিজেকে সিকিউরিটি নিরাপত্তায় রাখতেন তার মনে হতো সেটাই তার জীবনের শেষ বছর হতে চলেছে।

এভাবে চলতে থাকে দীর্ঘ ৭৬ বছর।

তার ৭৬ তম জন্মদিনে এক জ্যোতিষী তাকে চিঠি লিখে পাঠায়। সেই জ্যোতিষী অর্লণ্ড কে বলেছিলেন যে আপনার বয়সে সংখ্যাটা খুবই জটিল কারণ ৭৬ কে ভেঙে যোগ করলে ১৩ হয়  আপনি সাবধানে থাকবেন তারপর থেকে প্রত্যেকটি মাসের ১৩ তারিখ আরো পাগলের মতন  অদ্ভুত আচরণ করতেন  তিনি ঘর থেকে কোথাও  বের হতেন না  সারাদিন বিছানায় শয্যাশায়ী থাকতেন ১৯৫১ সালের ১৩ ই জুলাই ১১:৪৫  ঘুমের মধ্যে মারা যান তিনি।

মরতে তো সবাইকেই হবে কিন্তু এই মৃত্যুর দিন নিয়ে চিন্তায় নিজেকে রাখাটা ঠিক না আপনার যদি এরকম কোন ফোবিয়া থাকে মাথা থেকে সরিয়ে দিন।
Samuel Langhorne Clemens

৫.Samuel Langhorne Clemens(Mark twain)

তিনি একজন আমেরিকান লেখক ফিয়রিসট উদ্যোক্তা প্রকাশক ও লেকচারার ছিলেন। তিনি যখন গল্প লিখতেন তখন তিনি নাম দিতেন Mark twain।তাই বিশ্বজুড়ে সবাই তাকে এই নামেই জানতো।১৮৩৫ সালের ৩০ শে নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি ফ্লোরিডার  মিসৌরিতে। তার বাবা  John Marshall Clemens  এবং তার মা Jen Clemens ইনাদের ষষ্ঠ সন্তান ছিলেন তিনি মোট সাত জন সন্তানের মধ্যে ৪ জন বেঁচে ছিল।৩ বছর বয়সেই তার ভাই বেনজিমিন ও তার বোন মার্গারেট কে প্রাণ হারাতে দেখেছিলেন।শৈশব থেকেই মার্ক ছিলেন একটু ভাবুক প্রকৃতির।বড় হয়ে তিনি একজন ভালো লেখক হয়ে ওঠেন। তার লেখা বেশিরভাগ লেখা গল্প গুলির বিষয় ছিল বর্ণ বৈষম্য এবং দরিদ্রতাকে ঘিরে  তখনকার দিনের লেখকরা সাধারণত এই জিনিসগুলো কে এড়িয়ে চলতেন  তার লেখা বিখ্যাত উপন্যাস হলো The Adventures of Tom Sawyer  এবং The Adventures of Huckleberry Finn

যেগুলো পরবর্তীকালে দা গ্রেট আমেরিকান নোবেল পায় ১৯০৭ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি তরফ থেকে। ১৯০৯ সালে এক জায়গায় লেকচার দেওয়া কালীন মজা করে একটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে আমি ১৮৩৫ সালে  হ্যালির ধূমকেতু আসার সাথে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং  হাজার ১৯১০ সালে অর্থাৎ সামনের বছর হ্যালির ধুমকেতু আবার আসতে চলেছে পৃথিবীর কাছ থেকে।  ৭৫ বছর অন্তর অন্তর আসে আমি চাই হ্যালির ধূমকেতু এর সাথে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে।এটি যদি না হয় আমি খুব হতাশ হবো স্বাভাবিকভাবে তার এই কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল সবাই সেই দিন।কিন্তু রহস্যজনকভাবে তার এই ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হয়েছিল হ্যালির ধূমকেতু ১৯১০ সালে ২০ এপ্রিল আসার একদিন পরে একুশে এপ্রিল তিনি  হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান।

এইসব ঘটনা শোনার পর আমরা বলতেই পারি যে পৃথিবীতে অনেক ঘটনা হয়।এইসব ঘটনা গুলি আমরা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারি না।এই মানুষগুলি তার মৃত্যুর সঠিক ভবিষ্যৎবাণী করেছিল এই ঘটনা গুলির মধ্যে কোন ঘটনাটি আপনাকে বেশি হতভম্ব করেছিল। আমাকে প্লিজ কমেন্ট বক্সে জানাবেন আর যদি ভালো লাগে তো আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে দেবেন ফেসবুকে হোয়াটসঅ্যাপে এবং যেখানে আপনি চাইবেন সেখানে।

No comments:

Post a Comment